ATEXSA

ইউরোপ ভ্রমন

ডাঃ রুশদুল করিম
সহযোগী অধ্যাপক (শিশু)
ব্যাচ-৮৭।

বশ্বখ্যাত ইউরোপের ক্সনসর্গিক সে․ন্দর্য যুগ যুগ ধরে মানুষকে আকৃষ্ট করে আসছে। বিশেষ করে পৃথিবীর ভূস্বর্গ সুইজারল্যান্ডের অপরূপ সে․ন্দর্য সবাইকে মোহিত করে। গত অক্টোবর ১৯ সনে কনফারেন্সে যোগদানের পাশাপাশি ইউরোপের সে․ন্দর্য অবলোকনে রওয়ানা হই আমরা কয়েকজন ডাক্তার। কাতার এয়ারওয়েজে করে প্রথমে ইটালীর রোম নগরীতে পদার্পন করি। শত বছরের ঐতিয্যের ধারক ও বাহক রোম নগরীর সে․ন্দর্য আমাদের আকৃষ্ট করেছে। বিশ্বের খ্রিষ্টানদের তীর্থস্থান ভেটিক্যান সিটি প্রতিদিন হাজারো পর্যটকের আকষর্নের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকে। কলোসিয়াম ও ফাউন্টেন ঝর্ণার সে․ন্দর্য ও অনন্য।

রোমাটারমিনি হতে অত্যাধুনিক ইলেকট্রিক ট্রেন ইউরোস্টার করে ভেনিসের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। ৫০০ কিঃ মিঃ বেগের ট্রেন যেমন সুন্দর তেমনি আরামদায়ক। ডিসপ্লে বোর্ডে বিমানের মতই চারদিকে সে․ন্দর্য ফুটে উঠে। পানিতে ভাসমান ভেনিস নগরী ইতালীর অন্যতম প্রধান পর্যটন নগরী। নীলাভ পানির মোহনীয় দৃশ্যে গন্ডোলায় করে কপোত কপোতীর রোমান্টিক নে․ভ্রমন চিত্তাকর্ষক। ভেনিসের লিডো দ্বীপে ছিল বিশ্বের শিশু বিশেষজ্ঞদের মহাসম্মেলন। বিশাল ভেন্যুতে সারাবিশ্ব হতে আগত সহ¯্রাধিধক খ্যাতনামা ডাক্তারদের সান্নিধ্যে আসতে পারাটা ছিল ভীষন গে․রবের ব্যাপার। হেমন্তের ¯িস্নিগ্ধ বিকালে ওয়াটার টেক্সিতে করে ভেনিসের বিভিন্ন দ্বীপ পরিভ্রমন বড়ই মনোমুগ্ধকর।

ভেনিস হতে ট্রেনে করে সপ্নের দেশে সুইজারল্যান্ডে পাড়ি দিতেই মনে হল ভিন্ন এক জগৎ। যেমন সে․ন্দর্য্যরে লীলাভূমি তেমনি সুশৃংখল এক জনপদ। আবহাওয়া অনেকটা শীতল হলেও সর্বোচ্চ পাহাড় মাউন্টটিটলিসের চুড়ায় উঠার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা কেউ মিস করতে চায় না। ক্যাবলকার ৪ বার পরিবর্তন করে পাহাড়ের চুড়ায় যখন আমরা তাপমাত্রা তখন মাইনাস ২। জ্যাকেট, হাতে মোঝা, মাঙ্কি ক্যাপ পড়ে চারদিকে বরফের স্তুফ ও তুষারপাত উপেক্ষা করে ঝরমহ ড়ভ ারপঃড়ৎু প্রদর্শণ করে ছবি তোলা-এক অবিস্বরণীয় ঘটনা। বিখ্যাত রাইনফলসের প্রবল ¯্রােত ধারায় নে․কা ভ্রমণ- এক অনন্য অভিজ্ঞতা। লুসার্ণ সিটি ট্যুর ও জোরিখ সিটি ট্যুরও আকর্ষণীয়। বিশ্বের
অফিসনগরী হিসাবে খ্যাত জেনেভা শহর ও সে․ন্দর্য্যরে নগরী। জাতিসংঘ অফিস ও ডঐঙ অফিসের সুউচ্চ অট্টালিকার পাশাপাশি জেনেভা লেকের বাগানে ফ্লাওয়ার ক্লকের অপরূপ সে․ন্দর্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। জেনেভা লেকের ঝর্ণাধারা মোহনীয়।

জেনেভা হতে অত্যাধুনিক দ্বিতলবিশিষ্ট ট্রেনে করে প্যারিসে যাত্রা করি। ট্রেনের পরিবেশটা বেশ সুন্দর ছিল। যেহেতু ৬ ঘন্টার লম্বা ভ্রমন তাই রিলাক্সমুডে কেউ তাস খেলছে, গল্প করছে, আবার কেউ নিজের পোশা কুকুর বিড়ালকে আদর করছে। প্যারিসে পে․ছেই বাঙালী রেস্টুরেন্ট এ ইলিশ মাছ ও সবজী খেয়ে তৃপ্ত হলাম। বিশ্বের সর্বোচ্চ টাওয়ার- আইকেল টাওয়ারে যেতেই হাজারো পর্যটকের ফটেসুট চোখে পড়ে। বিকালের ¯িœগ্ধতায় আইফেলের একরূপ- রাতের আলোর ঝলকানি তে অন্য এক অপরূপ টাওয়ার। পায়ে হেঁটে হেঁটে আইফেল টাওয়ার এ উঠে কপি খাওয়ার মজাই অন্যরকম। লিফটে আইফেলের চুড়ায় উঠে রাতের পেরিস নগরীর সে․ন্দর্য অবলোকন এক বিশাল অভিজ্ঞতা। সীন নদীতে নে․বিহারে করে সুন্দর সুন্দর কারুকার্যময় অট্ট্রলিকা ও ব্রীজ পরিদর্শন-এক মধুর স্মৃতি। লুবর যাদুঘরে অপরূপা মোনালিসার মোহনীয় চাহনীতে আকৃষ্ট হয় শত সহ¯্র পর্যটক।

প্যারিসের শিল্পকলার খ্যাতি বিশ্বজোড়া। প্যারিস সিটি ট্যুরে এই শিল্পকর্ম গুলি স্বচক্ষে অবলোকন করে বিস্মিত হওয়ার পাশাপাশি পুলকিত হয়েছি। প্যারিস রোমান্টিক নগরী। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত হতে প্রেমিক প্রেমিকারা সে․ন্দর্য অবলোকনের পাশাপাশি রোমান্টিক সময় কাটাতে প্রতিদিন হাজারো
পর্যটক এখানে ছুটে আসে।
আমাদের গ্রæপট্যুরটি অসাধারণ ছিল। এই গ্রæপে ছিলেন আইনস্টাইন খ্যাত আফরোজা ম্যাডাম যিনি বিভিন্ন থিউরি দিয়ে আমাদের হতবাক করে দিতেন। ছিলেন মোনালিসা খ্যাত শিরীন ম্যাম যিনি মিষ্টি হাসি ও সুন্দর কমেডিতে আমাদের মাতিয়ে রাখতেন। জাদুকর জুয়েলাইচও ছিলেন-যিনি মুহুর্তেই ভিন্ন জগতে চলে যেতে পারতেন আবার পূনরায় সবার মাঝে ফিরে আসতেন। ছোট্টমনি ফারিসার মিষ্টি হাসি, শশীর ছবি তোলার স্পৃহা, রাসার ছোট্ট বাবু নিয়ে ইউরোপ ভ্রমনের স্পৃহা এবং হানিফ ম্যামের ইতিহাস‣শলী আমাদের ট্যুরে বাড়তি প্রাণ সঞ্চার করেছে। সর্বোপরি হানিফ স্যারের সুযোগ্য নেতৃত্ব ও মারুফ ভাইয়ের অক্লান্ত পরিশ্রমে স্বার্থক হয়েছে আমাদের এই গ্রæপ ট্যুর।
ইউরোপের সভ্যতা সংস্কিতি ও ক্সনসর্গিক দৃশ্য আবহমান কাল ধরেই মানুষকে আকৃষ্ট করে আসছে।
তাই ইউরোপভ্রমন আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ স্মৃতি হয়ে থাকবে।